গর্ভাবস্থায় মায়েদের কিছু সাধারন সমস্যা এবং তার প্রতিকার

গর্ভাবস্থায় প্রতিটি মায়েরই কিছু না কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় যা খুব সহজেই হ্যান্ডেল করা যায়। কিন্তু অনেকে আবার বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে গিয়ে উল্টোটিও করে বসেন সে দিকেও লক্ষ্য রাখা উচিত। এ সময় বড় কোনো সমস্যা দেখা দিলে সরাসরি চিকিত্সকের পরামর্শ নেয়া উচিত। কিন্তু গর্ভকালীন সময়ে অনেক মায়েদেরই কিছু সাধারণ সমস্যা হয়ে থাকে যে গুলি তারা নিজেরাই প্রতিরোধ করতে পারেন। তার জন্য দরকার একটু সচেতনতা।
কোষ্ঠ কাঠিন্য :-
গর্ভাবস্থায় মায়েদের কোষ্ঠ কাঠিন্য সমস্যাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তাই এর থেকে পরিত্রানের জন্য  প্রচুর পানি খেতে হবে। ফল আর স্বাভাবিক আঁশযুক্ত খাবার, যেমনঃ ফল, সাগু, ভূষি খেতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করাটাও জরুরি।
গর্ভবতী মায়েদের সেবা
বমি বমি ভাব :-
গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে এই অসুবিধা দেখা দেয়, বিশেষ করে সকালের দিকে। যেসব মায়েদের এই সমস্যা দেখা দেয় তাদের সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তেলবিহীন শুকনো খাবার যেমনঃ মুড়ি, খই, রুটি, বিস্কুট ইত্যাদি খেয়ে কিছুক্ষ্ণ শুয়ে থাকতে হবে। একসাথে বেশি না খেয়ে এসব মহিলার ২ থেকে ৩ ঘন্টা পর পর অল্প অল্প খাওয়া উচিৎ। প্রতিবার খাবার পর ৫ থেকে ১০ মিনিট বিছানায় শুয়ে বিশ্রাম নিলে বেশি আরাম পাওয়া যাবে।
বুক জ্বালা :-
গর্ভাবস্থার মাঝামাঝি এবং শেষ দিকে মায়েদের বুক জ্বালা হওয়াটা খুব সাধারন ঘটনা। মশলাযুক্ত খাবার ও প্রচুর পরিমান পানি এবং সম্ভব হলে দুধ পান করলে বুক জ্বালা কমে যাবে। গর্ভাবস্থায় এন্টাসিড বা অম্লনাশক পরিহার করা উচিৎ।
খিল ধরা :-
গর্ভকালে কোন কোন স্নায়ুর উপর চাপ পড়লে গর্ভবতীর পা বা উরুতে খিল ধরতে পারে। পা শরীর থেকে উঁচু জায়গায় রেখে শুলে অথবা পা ছড়িয়ে বসে পায়ে তেল মালিশ করলে বা বার বার গোটালে ও ছড়ালে এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়ামের অভাব ঘটলেও এরকম হতে পারে। সেক্ষেত্রে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলে খিল ধরা সেরে যায়।
বারবার প্রসাবের বেগ :-
গর্ভের প্রথম ৩ থেকে ৪ মাস এটা হওয়া স্বাভাবিক। প্রসাবের জ্বালাপোড়া না থাকলে এ নিয়ে চিন্তার কোন কারন নেই।
বুক ধড়ফড়ানি :-
গর্ভাবস্থায় উপরের দিকে জরায়ুর চাপে অথবা যমজ সন্তান পেটে থাকলে উপরের দিকে বেশি চাপ পড়ে ও বুক ধড়ফড়ানি হয়। এতে ঘাবড়াবার কোন কারন নেই।
মুখোশ চিহ্ন :-
গর্ভাবস্থায় অনেক মেয়ে মুখে, স্তনে আর পেটের মাঝখানে নিচের দিকে পর্যন্ত গাঢ় সবুজ রঙের দাগ হয়। প্রসবের পর কখনো কখনো এগুলি চলে যায়, কখনো বা যায় না। যে মেয়েরা জন্ম নিয়ন্ত্রণের বড়ি খায় তাদেরও কখনো কখনো এরকম দাগ হয়। এগুলি একেবারে স্বাভাবিক ব্যাপার, কোনো দুর্বলতা বা অসুখ বোঝায় না। তাই কোনো চিকিৎসারও প্রয়োজন নেই।
পায়ের শিরা ফুলে যাওয়া :-
পায়ের দিকে থেকে যেসব শিরা আসছে সেগুলোর উপর গর্ভস্থ শিশুর চাপ পড়ে এবং এর চাপে শিরাগুলো ফুলে যায়। কোন কোন সময় এমনো হয় যে, শিরাগুলো ফেটে যাবে। এমতাবস্থায় চলাফেরা করার সময় পায়ে ব্যান্ডেজ বেঁধে চলাফেরা করা উচিৎ। বসা বা শোবার সময় পা সব সময় উপরে তুলে বসতে বা শুয়া উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *