অণ্ডলালমূত্র (Albuminuria) – কারণ, লক্ষণ এবং হোমিও চিকিৎসা

এই রোগে রোগীর মূত্রের সাথে অণ্ডলাল বা এলবুমেন (Albumen) দেখতে পাওয়া যায়। এই রোগের সঙ্গে প্রায়ই মূত্রগ্রন্থির প্রদাহভাব প্রকাশ পায়। সাধারণত মূত্রগ্রন্থির পুরাতন রোগাবস্থায় মূত্রের সঙ্গে অধিক পরিমানে অণ্ডলাল বা এলবুমেন(Albumen) ক্ষরণ হয়ে থাকে। যেকোন কারণে যদি কিডনি যন্ত্রের অভ্যন্তরে সূক্ষ সূক্ষ মূত্র নালীর কোষগুলো প্রদাহিত হয় তা হলে ইহার রক্ত মধ্যস্থ এলবুমেন বা অন্ডলাল মূত্র নালীর মধ্যে নিক্ষিপ্ত হওয়ার ফলে মূত্রে অণ্ডলাল বা এলবুমেন দেখা যায়।

এই রোগ বিশেষ কত গুলো কারণের জন্য সৃষ্টি হয়ে থাকে যেমন :- অজীর্ণ, অতি মাত্রায় অণ্ডলালময় খাদ্য গ্রহণ, ঠান্ডা লাগা, জল বৃষ্টিতে ভেজা, মদ্য পান ইত্যাদি। কোন কারণ বশত কিডনি আক্রান্ত হলে এই জাতীয় লক্ষণ প্রকাশ পেয়ে থাকে।

এবার আসুন এই রোগের লক্ষণগুলির দিকে দৃষ্টি দেই। রোগীর প্রস্রাব ঘন, বর্ণের পরিবর্তন এবং প্রস্রাব পরীক্ষায় অণ্ডলাল বা এলবুমেন (Albumen) দেখতে পাওয়া যায়। শীতকম্প হয়ে পীড়ার আরম্ভ হয়। পিপাসা, মূত্রকোষে টান টান ভাব, বেদনা এবং এই বেদনা সময় সময় কুচকি ও অন্ডকোষ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। বার বার প্রস্রাব হয় এবং প্রস্রাবের পরিমান কম হয়। প্রস্রাব কালচে বর্ণের অথবা কখনো কখনো রক্ত মিশ্রিত প্রস্রাব দেখা যায়। রোগীর দেহে শোথ লক্ষণ প্রকাশ পায়। হাত পা এবং মুখমন্ডলে স্ফীত ভাব প্রকাশ পায়। এছাড়া অম্ল উদগার, রক্ত সল্পতা, মাথার যন্ত্রনা, হৃদপিন্ডের গোলযোগ প্রভৃতি উপসর্গ দেখা যায়।

এই রোগের হোমিওপ্যাথি চিকিত্সায় অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথরা রোগীর সবগুলি লক্ষণ বিবেচনায় এনে অথবা প্রয়োজনীয় ডাক্তারি পরীক্ষা করে কার্যকর ট্রিটমেন্ট দিয়ে থাকেন। দেখা যায় খুব অল্প দিনের হোমিও চিকিত্সাতেই রোগীর অণ্ডলালমূত্র Albuminuria রোগ নির্মূল হয়ে যায়।

চিকিত্সা নেয়ার সময় রোগীকে কিছু আনুষঙ্গিক পথ্য ও বিষয় খেয়াল রাখলে ভালো হয়। যেমন বিশ্রাম এবং আলোবাতাস যুক্ত ঘরে থাকা রোগীর জন্য হিতকর। ঠান্ডা লাগানো উচিত নয়। হালকা গরম পানি, গরম পানিতে গোসল করা এবং উষ্ণ জলবায়ূ প্রধান স্থানে বসবাস করা হিতকর।

দুধ এই প্রকারের রোগীদের জন্য একটি উত্কৃষ্ট পথ্য, অতিরিক্ত লবন যুক্ত খাবার হতে সাবধান থাকাই ভালো। ঘোল, পাতলা খিচুরী, প্রচুর পানি পান করা, ফলের রস এবং পরিমিত পরিমান আহার গ্রহণ অধিক ফলদায়ক। শারীরিক এবং মানসিক পরিশ্রম করা আদৌ উচিত নয়। রোগের প্রথম অবস্থায় সহজ ও লঘু জাতীয় খাবার এবং কঠিন অবস্থায় দুধ রুটি সুজি দেয়া উচিত।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *