মহিলাদের ডিম্বাশয়ের প্রদাহের (Ovaritis) কারণ, লক্ষণ ও হোমিও চিকিৎসা

মহিলাদের ডিম্বাশয়ে কোন জীবানুর ইনফেকশন হয় বা কোন ক্ষত সৃষ্টি হয় তখন যে রোগ লক্ষণ প্রকাশ পায় তাকে ডিম্বাশয়ের প্রদাহ বলা হয়। ডিম্বাশয়ের প্রদাহের ফলে বেশ কিছু জটিল উপসর্গ সৃষ্টি হয় যা মহিলাদের জীবনকে বিষিয়ে তুলে। তাই এই সমস্যার কারণ এবং লক্ষণগুলি জেনে রাখলে অন্তত এই রোগের প্রতিরোধে মহিলারা কার্যকর পদক্ষেপ রাখতে পারবে। আসুন জেনে নেই মহিলাদের ডিম্বাশয়ের প্রদাহের কারণ, লক্ষণ এবং আক্রান্ত হলে করণীয় বিষয় সম্পর্কে।

মহিলাদের ডিম্বাশয়ের প্রদাহের কারণ :- বিভিন্ন কারণে ডিম্বাশয়ের প্রদাহ হতে পারে যথা – প্রচন্ড ঠান্ডা লাগা, ঋতুকালীন সহবাস করা, পায়ের পাতা জলে ভেজান, কোন রকম আঘাত লাগা, হস্তমৈথুন ইত্যাদি কারণে হতে পারে। নানা প্রকার জীবানু ডিম্বনালী দিয়ে সোজা গিয়ে ডিম্বাশয়কে আক্রমন করতে পারে। এছাড়া পেটের অন্যান্য যন্ত্রাদির ইনফেকশন হতেও এই রোগের উদ্ভব হতে পারে।

অনেক সময় ঋতু কালে নোংরা কাপড় চোপর ব্যবহার করার ফলে বীজাণুর সংক্রমণ ঘটতে পারে। এই জাতীয় বীজাণু জরায়ু ডিম্বনালী ও ডিম্বকোষ প্রভৃতি আক্রমন করে প্রদাহের সৃষ্টি করতে পারে। ষ্টাফাইলো ষ্টেপটো , বিকোলাই প্রভৃতি বীজাণু দ্বারা এই রোগ বিস্তার লাভ করে। অনেক সময় যক্ষারোগ থেকে ইহার সৃষ্টি হতে পারে। গনোরিয়া, সিফিলিস প্রভৃতির জীবাণু ডিম্বনালী অতিক্রম করে ডিম্বাশয় আক্রমন করতে পারে। কোন কোন ক্ষেত্রে মূত্রথলি, পেরিটোনিয়াম, অন্ত্র, লিভার প্রভৃতি স্থানে জীবাণু দূষণ ফোড়া থেকেও ডিম্বাশয়ের প্রদাহ হতে পারে তবে ইহা অতি কম ক্ষেত্রেই ঘটে থাকে।

মহিলাদের ডিম্বাশয়ের প্রদাহের লক্ষণ :- ডিম্বাশয় প্রদাহ রোগে আক্রান্ত রোগিনীর মধ্যে বিশেষ কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায় যথা – কখনো ঋতুস্রাব বৃদ্ধি পায় কখনো হ্রাস পায়। মাথার যন্ত্রণা, মাথাধরা, মাথাঘোরা প্রভৃতি লক্ষণ দেখা যায়। পেটে প্রচন্ড ব্যথা থাকে এবং সেটা পিঠে এবং কোমরে ছড়িয়ে পড়ে। ডিম্বাশয় আকারে বৃদ্ধি পায়। Bi-manual পরীক্ষা করলে ইহা বুঝা যায়। অনেক সময় সারা দেহে প্রচন্ড ব্যথা এবং তার সাথে জ্বর থাকে। কখনো জ্বরের প্রবলতার জন্য বমি, প্রলাপ, মূর্চ্ছা প্রভৃতি হয়ে থাকে।

কখনো ঋতুর পর সাদাস্রাব চলতে থাকে, ফোটা ফোটা স্রাব দীর্ঘদিন ধরে চলে এবং রোগিনী এর জন্য কষ্ট পেয়ে থাকে। কখনো বা স্রাব বন্ধ হয়ে ৮/১০ দিন পর আবার হতে থাকে, স্রাব অত্যন্ত দুর্গন্ধ প্রকৃতির হয়ে থাকে, কোন কোন সময় স্রাবের সঙ্গে থান থান কালো বর্ণের রক্ত টুকরো দেখা দেয়। এই রোগে বেশি দিন ভুগলে বন্ধাত্ব লক্ষণ দেখা দিতে পারে এবং সেপটিক হতে পারে। তাই রোগাক্রমনের শুরুতেই প্রপার হোমিওপ্যাথি চিকিত্সা নিলে রোগটি জটিলতার দিলে না গিয়ে শুরুতেই সমূলে নির্মূল হয়ে যায়।

এই রোগের ক্ষেত্রে কুচকির উপর বেদনা ও জ্বালা ভাব থাকে। ডিম্বকোষ স্ফীত হয়ে এমন প্রদাহ হতে পারে যে রোগিনী ঐ স্থানে হাত দিতে ভয় পায় বা স্পর্শ কাতর হয়। স্নায়ুবিক লক্ষণ প্রকাশ পায়। বস্তুত ইহা মহিলাদের একটি মারাত্মক প্রকৃতির রোগ। তাই কোন প্রকার অবহেলা না করে অভিজ্ঞ একজন হোমিও ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে যথাযথ চিকিত্সা নেয়া উচিত।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *