করোনা ভাইরাসের লক্ষণ ও প্রতিরোধ কি ভাবে করবেন জেনে নিন

করোনা ভাইরাসে করনীয়ঃ

যেসব ভাইরাস গুলো RNA দিয়ে তৈরী, তারা কুখ্যাত চরিত্রের হয়ে থাকে , যেমন- HIV, Hepatitis C, Influenza, Rabies, Ebola, Dengue, Polio ইত্যাদি। সম্প্রতি এই দলে যোগ হয়েছে নতুন নাম- Corona virus.. এই করোনা ভাইরাস প্রথম ধরা পড়ে চায়না তে ২০০২ সালে ।

এই ভাইরাসের স্ট্রাকচার দিয়েই এর নামকরণ করা হয়েছে ।। এদের গায়ে চারিদিকে ব্যাঙের ছাতার মত Halo (Corona) সাজানো থাকে । এর ভিতরে একটা Single stranded RNA থাকে । এটার দুইটা সাবটাইপ আছে- 229E এবং OC43…

আমাদের যে কমন কোল্ড হয় Rhinovirus দিয়ে, করোনা ভাইরাস দিয়েও একই রকম কমন কোল্ড হয়, কিন্তু সিরিয়াস ফর্মে গেলেই Atypical Pneumonia এর রূপ ধারন করে । যাকে Severe Acute respiratory syndrome বা SARS বলে। তাই অনেকে একে সার্স ভাইরাসও বলে থাকে । এই ভাইরাস ছড়ায় বাতাসে শ্বাস নিঃশ্বাসের মাধ্যমে । শীতকালেই এর প্রকোপ দেখা যায়। ধরে নেয়া হয়- বাদুর এই ভাইরাসের একমাত্র রিজার্ভার ।।

২০০২ সালের পর ২-৩ পর পর ছোট খাটো আক্রমণ এই ভাইরাস চায়নার আশে পাশে করেছে । ২০২০ সালের মহামারীর পূর্বে প্রায় ৮৫০০ জন করোনা ভাইরাসের রোগী সনাক্ত হয়েছিল। তার মধ্যে মারা গিয়েছিল প্রায় ৮০০ জন (প্রায় ১০% fatality) ।

২০১২ সালে মধ্যপ্রাচ্যে( বিশেষ করে সৌদি আরবে) এই ভাইরাসের এক মহামারী দেখা গিয়েছিল, তাকে বলা হতো মার্স করোনা ভাইরাস ( Middle East respiratory syndrome Corona virus)।
এই ভাইরাসের ইনফেকশনে ৫০% মানুষের কোনো সিম্পটমই প্রকাশ পায় না । অনেক সুস্থ্য বাচ্চাদের শরীরে এই ভাইরাসের এন্টিবডি তার উপযুক্ত প্রমাণ। এটার ইনফেকশন মূলত ফুসফুসের Epithelium কেন্দ্রিক, এর বাইরে অন্য অর্গান আক্রান্ত হয় না । শরীরে ভাইরাসের Incubation period ৩ থেকে ১০ দিন।

রোগের সিম্পটম – নাক দিয়ে পানি পড়া, জ্বর, কাশি, মাথা ব্যাথা। আর সিরিয়াস ফর্মে মারাত্মক শ্বাসকষ্ট । Respiratory mucosa তে Edema তৈরি করে, যার ফলে অক্সিজেন নিতে পারে না ঠিক মত। যার ফলে Severe Hypoxia দেখা যায় । যে পেশেন্ট গুলো মারা যায় তার কারন হলো- Refractory Hypoxemia… এই ভাইরাস ফুসফুসের Angitensin Converting Enzyme-2 এর সাথে বাইন্ড করে থাকে , যার ফলে Fluid Balance Dysregulation হয়।

SARS রোগে chest Xray করলে Ground Glass Infiltration পাওয়া যায়, কিন্তু কোনো Cavitation পাওয়া যায় না । Blood এ WBC, Platelet Count কমে যায়। PCR অথবা এন্টিবডি টেস্ট দিয়ে রোগ কনফার্ম করা যায় ।।

করোনা সার্স ভাইরাসের চিকিৎসা এখনো আবিষ্কার হয় নাই । সিম্পটম্যাটিক চিকিৎসা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অকার্যকর। রিবাভিরিন-স্টেরয়েড কম্বিনেশন ইউজ করা যেতে পারে ।

করোনা সার্স প্রতিরোধই এর এর প্রধান চিকিৎসা । সবসময় মাস্ক ব্যবহার করা জরুরী, সাথে সাথে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা । সন্দেহ জনক সার্স আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন রোগ যেমন, জ্বর, কাশি, শর্দি, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি হলে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে । যেসব দেশে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে সেসব দেশ ভ্রমন করা থেকে বিরত থাকা, অথবা যারা ঐ সব দেশ থেকে আসে, তাদের ভালো করে পরীক্ষা করা ও চিকিৎসা করা ।। গ্লোবালাইজেশনের যুগে রোগ Pandemic হতে সময় লাগে না। তাই সবার সচেতনতাই পারে এই করোনা ভাইরাস ভয়ঙ্কর ছোবল থেকে সবাইকে রক্ষা করতে ।।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *