এই প্রচন্ড গরম এলার্জি জনিত আর্টিকারিয়া বা আমবাতে কারন, লক্ষন ও হোমিওপ্যাথিক সমাধান


আর্টিকারিয়া বা আমবাত একটি এলার্জিজনিত রোগ। মানব দেহে এলার্জিজনিত রোগগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কমন একটি রোগ এটি। বোলতা বা ভিমরুল কামড়ালে গায়ে যেমন চাকা চাকা হয়ে ফুলে উঠে,এটা দেখতে ঠিক তেমনই, সাথে তীব্র চুলকানি, জ্বালা ও চিমটিকাটার মত একধরণের অনুভূতি প্রকাশ পায়।

কারণ : এলার্জিই রেগের প্রধান কারণ।গরুর গোশত কাঁকড়া, পুইশাক,মিষ্টি কুমড়া হাঁসের ডিম ও গোশত,ইলিশ, চিংড়ি, পুটি মাছ বেগুন মসুরের ডাল প্রভৃতি আহারের পরে অনেকের শরীরে আমবাত প্রকাশ পায়।অতি বর্ষা ও অতি গ্রীষ্ম এবং ডাস্টের কারণে এলার্জি মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে কারো কারো শরীরে আমবাত প্রকাশ পায়। এ্যালোপ্যাথি ওষুধ যেমন পেনিসিলিন, টেট্রাসাইক্লিন, সালফোনামাইড প্রভৃতি ওষুধ সেবনের কারণে আমবাত হতে পারে। শরীরে যে কোন অঙ্গ প্রত্যঙ্গে সুপ্ত ইনফেকশনের কারণে আমবাত প্রকাশ পেতে পারে।

লক্ষণ : আমবাত হঠাৎ করেই শরীরে চাকা চাকা হয়ে ফুলে উঠে, জ্বালা ও চুলকানীযুক্ত বা চুলকানীবিহীন, ইহা লাল, হালকা লাল বা গোলাপী ও শরীরের বর্ণ ধারণ করতে পারে। শরীরের অল্প পরিসর জায়গাজুড়ে বা সমগ্র শরীরজুড়েও হতে পারে।

সাধারণত বিকাল বা সন্ধ্যার দিকেই আমবাতের উপসর্গ প্রকাশ পায়।এছাড়াও অতি গ্রীষ্ম ও অতি বর্ষায় এর প্রাদুর্ভাব বেশি থাকে। অনেক সময় জামা কাপড় খোলা মাত্রই গা চুলকায় এবং আমবাত প্রকাশ পায়। কারো কারো শরীর ভিষণ চুলকায় এবং একটু চুলকাইলেই ফুলে উঠে। তবে প্রাপ্তবয়স্কদের বেলায় জ্বর আসে না কিন্তু শিশুদের বেলায় তীব্র আক্রমণের সময় জ্বর আসতে পারে। সাথে মাথা ব্যথা,বমিবমিভাব, পেটব্যথা ও প্রচণ্ড চুলকানি ও জ্বালা থাকতে পারে।

চিকিৎসা : কারো কারো ক্ষেত্রে চিকিৎসা ছাড়াই আমবাত প্রকাশের কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘন্টার মধ্যেএ উপসর্গ মিলে যায়। তখন আর চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। তবে যাদের শরীরে আমবাত ঘনঘন প্রকাশ পায় এবং তীব্র আকার ধারণ করে তখন চিকিৎসা নিতে হবে।

হোমিওতে এ রোগী সম্পূর্ণ আরোগ্য হয় এবং পুনরায় এটি আর প্রকাশ পায় না। শরীরের মধ্যে সুপ্ত ও গুপ্ত ইনফেকশনের মত কোন কারণে যদি আমবাত প্রকাশ পায়, তা হোমিও চিকিৎসার মাধ্যমে উক্ত আমবাতসহ গুপ্ত ও সুপ্ত ইনফেকশনও ভালো হয়ে যায়। এটিই হোমিও চিকিৎসার বিশেষ কৃতিত্ব।

প্রাথমিকভাবে রাসটক্স, এপিসমেল, আর্টিকা ইউরেন্স, আর্সেনিকাম এল্বাম, ডালকামারা, পালসেটিলা, নেট্রামমিউর,নেট্রাম সালফ্ স্কিন কেয়ার ট্যাবলেট/ ড্রপ প্রভৃতি ওষুধ লক্ষণানুসারে যেকোন ১টি বা ২টি ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করতে পারেন। কিন্তু রোগের তীব্রতা,হ্রাস-বৃদ্ধি, রোগের কারণ ও উৎস অনুসন্ধান, রোগীর আহার নিদ্রা, রুচি অরুচি, ঠাণ্ডা গরমে ও নড়াচড়ায় রোগের হ্রাস বা বৃদ্ধি, ধাতুগত ও মানসিক লক্ষণ ইত্যাদি উপসর্গ অনুসারে উক্ত ওষুধের ডোজ, মাত্রা,শক্তি, একজন চিকিৎসকই নির্ধারণ করতে পারেন। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা দরকার।

নিষেধ ও পরামর্শ : হোমিও চিকিৎসায় তেমন কোনও বাঁধা নিষেধ নেই। তবে যে খাবার খেলে আপনার এলার্জি বেড়ে আমবাত প্রকাশ পায় সে খাবার সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখুন। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন, জামা কাপড় ২ দিনের বেশি পড়া উচিৎ নয় এবং ডাস্ট থেকে দূরে থাকুন। মানসিক চাপ ও টেনশনমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। আলমারিতে বা ওয়ারড্রবে রাখা অনেক দিনের জামা কাপড় ওয়াশ করে পড়া উচিৎ। নেশাগ্রস্তরা নেশা পরিহার করুণ।

অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করুণ, সুস্থ্য থাকুন।

বিশেষ পরামর্শের জন্য

ডা. মো. ইমতিয়াজ আদনান
মোবাইল : ০১৭৩৮- ৫০৮৮০০


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *