‘ইফতারের পর অসম্ভব’ ক্লান্তি দূর করার উপায় জেনে নিন।

ইফতারের পর ‘অসম্ভব’ ক্লান্তি বোধ করাটা খুবই স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। সারাদিন না খেয়ে থাকার পর কিছু মুখে দেওয়া হলে স্বভাবতই শরীর খোঁজে একটু বিশ্রাম। ক্লান্তিতে মনে হয় জীবনীশক্তি ফুরিয়ে আসছে। রমজানের শুরুর দিকে কম মনে হলেও যত সময় যেতে থাকে, বাড়তে থাকে ক্লান্তির পরিমাণ। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন।

কিন্তু জীবন তো তাতে থেমে থাকবে না। রমজান চলবে, পাশাপাশি চলবে জীবনের সব আয়োজন। আর তাই, শিখে নিতে হবে ইফতারের পরবর্তী ক্লান্তিতে মানিয়ে নেওয়ার উপায়। আজ রইল কিছু টিপস।

পরিমাণে পরিমিতি
ইফতারের পর খারাপ লাগার অন্যতম বড় কারণটি হচ্ছে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলা। ভরপেট খেয়ে ফেলার পর এমনিতেই ক্লান্তি জেঁকে বসে, ঘুম পায়। তাই ইফতারে খাওয়া খুব পরিমিত হবে। হিসাব করা খাবার ইফতারে খান, তারপর দৈনন্দিন কাজ শেষে রাতের খাবার খান। সেটাও পরিমিতভাবেই। অনেকেই ইফতারে বেশি খেয়ে রাতের খাবারটি বাদ দিতে চান, এতেও ক্লান্তি বাড়ে।

মেন্যু পরিবর্তন
ভাজা-পোড়া খাবার একদম বাদ দিন তালিকা থেকে। রমজান মানেই ছোলা, পেঁয়াজু খেতে হবে, এমন কিন্তু মোটেও নয়; বরং খাবার তালিকায় স্যুপ, সবজি, হাতে গড়া রুটি, অল্প ছোলা ও মুড়ি, কম তেলে ভাজা চপ, ঘরে তৈরি কাবাব থাকতে পারে। আর থাকবে প্রচুর তাজা ফল। দেখবেন ক্লান্তি কমে অর্ধেক হয়ে গেছে।

বেছে নিন সঠিক পানীয়
ইফতারে কোমল পানীয় একদমই পরিহার করুন। বেছে নিন অল্প চিনিতে তৈরি শরবত। একই সাথে প্রচুর সাদা পানি পান করুন। কারণ পানির অভাব থেকেও ক্লান্তি বোধ হয়ে থাকে। একবারে বেশি নয়, অল্প অল্প করে বারবার পানি পান করাটাই উচিত। ইফতারের পরই চা-কফির মগ হাতে বসে যাবেন না। এতে শরীর আরও পানিশূন্য হয়ে পড়বে এবং ক্লান্তি বেড়ে বহু গুণ হয়ে যাবে। যদি ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় পান করতেই হয়, সে ক্ষেত্রে গ্রিন টি বা অল্প আদা দিয়ে রং চা পান করুন। দেখবেন অনেকটাই ঝরঝরে লাগছে।

একটি/দুটি খেজুর খান
খেজুর শরীরে প্রয়োজনীয় চিনির জোগান দিয়ে থাকে। শক্তি জোগাতেও খেজুর অনন্য। ইফতারে বেশি নয়, দুই থেকে তিনটি খেজুর রাখাই যথেষ্ট। এ ছাড়াও ইফতারে এক গ্লাস গ্লুকোজ পান করতে পারেন। এটি রক্তে দ্রুত মিশে গিয়ে ক্লান্তি কমায়।

সোশ্যাল মিডিয়া, টেলিভিশন বা কেনাকাটা নয়
ইফতার ও নামাজ শেষ করেই মোবাইল ফোন বা টিভির পর্দায় ব্যস্ত হয়ে পড়বেন না। দৌড়ে শপিং করতেও চলে যাবেন না; বরং কিছুক্ষণ শান্ত হয়ে বসে বিশ্রাম নিন। প্রয়োজনে শুয়ে থাকুন। ঘুমাবার প্রয়োজন নেই, তাতে পড়ে আরও খারাপ লাগবে। ১৫ থেকে ২০ মিনিট একটু বিশ্রাম নিলেই ঝরঝরে বোধ করবেন। বিশ্রাম নেওয়ার পরই তেষ্টা বোধ হলে গ্রিন টি বা রং চা পান করুন।

প্রয়োজনীয় কাজগুলো আগেই সেরে রাখুন
ইফতারের আগেই যতটা সম্ভব জরুরি কাজগুলো সেরে নিন। এতে ইফতারের পর কাজের চাপ কম পড়বে। শরীরে ক্লান্তিও হবে কম।

সেহরিতে বুঝে খান
ইফতারের মতো সেহরিও বেছে নিন খুব হালকা। সামান্য ভাত, মাছের ঝোল, ডাল, সবজি। বেশি ঝাল-মসলা দেওয়া খাবার একেবারেই এড়িয়ে চলুন। এতে সারাদিন শরীর ক্লান্ত হবে কম, আর ইফতারের পর ক্লান্তি বোধ করবেন না।

রমজান কাটুক সুস্থতায়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *