ভেরিকোসিল – পুরুষের যৌন সমস্যা

ভেরিকোসিল (Varicocele) পুরুষদের একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য যৌন রোগ। স্পার্মাটিক কর্ড বা রেত্রজ্জু, এপিডিডায়মিস বা অন্ডকোষের উপরিস্থিত কেচোর মত লম্বা বস্তু – ইহাই উক্ত উত্পাদক নাড়ী এবং টেস্টিকেলের (কোষের) শিরা সমূহ স্ফীত হয় এবং গাট গাট মত হয়ে ফুলে উঠে, আঙ্গুল দিয়ে পরীক্ষা করলে যেন একটা কেচো কুন্ডলির মত পাকিয়ে আছে মনে হয়। সোজা ভাবে শুয়ে থাকলে ও চাপ দিলে ইহা ক্ষুদ্র হয়ে যায় এবং খাড়া হয়ে দাড়ালে পুনরায় বৃদ্ধি পায়। অধিকাংশ স্থলে এই পীড়া বাম দিকেই অধিক দেখা যায় কারণ বাম দিকের স্পার্মাটিক কর্ড ডান দিক অপেক্ষা অধিক লম্বা এবং অধিক জড়ানো থাকে। এছাড়া বাম দিকে এসগময়েড ফ্লেক্সরে অধিক পরিমান পানি জমে থাকলে তার চাপেও বাম দিক আক্রান্ত হয়।

এই রোগে কোনো কোন ক্ষেত্রে আদৌ যন্ত্রনার উদ্রেক করে না আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভয়াভহ যন্ত্রনার সৃষ্টি করে থাকে। এক প্রকার টানা হেচড়ার মত বেদনা কোমর থেকে প্রত্যঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। এই বেদনা হাটাচলা করলে, দাড়ালে এবং গরম কালে অধিক অনুভূত হয়।

যে সকল পুরুষ অধিক কামাশক্ত অথবা যারা অত্যধিক হস্তমৈথুন করে তারা যদি হঠাত এই অভ্যাস ছেড়ে দেয় কিন্তু কাম চিন্তা ত্যাগ করতে না পারলে এপিডিডায়মিসের উপর দিকে স্পার্মাটিক কর্ড এর মধ্যে বীর্য ধীরে ধীরে সঞ্চিত হয়ে স্ফীত হয়ে উঠে। ইহাতে কোষ উপর দিকে আকৃষ্ট হয়, স্ফীত হয় এবং স্পর্শ করলে, দাড়ালে বা হাটাচলা করলে বেদনার উদ্রক হয়। লিঙ্গ অর্ধবক্র হয়, এই অবস্থায় কিছুক্ষণ বা কিছুদিন থাকার পর ধীরে ধীরে ঐ স্ফীত ভাব কমে আসে এবং কখনো আবার বৃদ্ধিও পেতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত ভেরিকোসিলে পরিনত হয়। ইহার ফলে পুরুষাঙ্গ কখনো শক্ত ও সোজা হয়, কখনো বা বাকা হয়ে থাকে এবং এটা রাত্রেই বেশি হতে দেখা যায়। ইহাতে রোগী অনেক যন্ত্রনাও ভোগ করে থাকে।

ভেরিকোসিল (Varicocele) এর অত্যন্ত কার্যকরী এবং আরোগ্যকারী হোমিও চিকিত্সা রয়েছে। একজন ভালো হোমিওপ্যাথ রোগীর সবগুলি লক্ষণ ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে সঠিক ঔষধ নির্বাচন পূর্বক যথাযথ ট্রিটমেন্ট দিলেই ভেরিকোসিল অনায়সে নির্মূল হয়ে যাবে। তবে এই সময় উগ্র মসলা যুক্ত খাদ্য গ্রহণ করা উচিত নয়। হালকা অথচ পুষ্টিকর খাদ্যই গ্রহণ করা শ্রেয়। কোনো প্রকার মদ্য পান বা উগ্র নেশা করা অনুচিত। সর্বদা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন জামা কাপড় ব্যবহার করতে হবে। রাত্রি জাগরণ এবং অসৎ সঙ্গে মেলামেশা করা আদৌ উচিত নয়।


Leave a Reply