বিভিন্ন প্রাকৃতিক পন্থায় জন্মনিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করে আসছে মানুষ বহু কাল ধরে যদিও এমন এক সময় ছিল যখন জন্মনিয়ন্ত্রনের জন্য কোন কৃত্রিম পদ্ধতি ছিলনা। কিন্তু আধুনিক কালে জন্মনিয়ন্ত্রনের জন্য রয়েছে অনেক উপকরণ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে উপকার বয়ে আনলেও কোনো কোনোটা কিছু ক্ষেত্রে ক্ষতিও করে থাকে। তাই জন্মনিয়ন্ত্রনের প্রাকৃতিক পদ্ধতি সম্পর্কে অনেকেই ভাবেন। এরকমই একটি প্রাকৃতিক পদ্ধতি হলো ‘নিরাপদ সময় বা Safe Period.’ আজকে আমরা সে বিষয় সম্পর্কেই জানব।
মেয়েদের মাসিক ঋতুচক্র (Menstrual cycle) এমন যে এতে এমন কিছু দিন আছে যা নিরাপদ দিবস (Safe period) হিসেবে ধরা হয়।
এই দিবস গুলোতে স্বামী-স্ত্রীর অবাধ মিলনের (Sexual act) ফলে স্ত্রীর সন্তান সম্ভবা হবার সম্ভাবনা থাকেনা। যেহেতু এই পদ্ধতিটি প্রকৃতিগত ভাবেই নির্দিষ্ট করা তাই একে প্রাকৃতিক পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি বলা হয়। অনেক সময় একে ক্যালেন্ডার পদ্ধতিও বলা হয়।
এ পদ্ধতি কার্যকর করতে অবশ্যই জেনে নিতে হবে স্ত্রীর ঋতুচক্রের নিরাপদ দিন কোন গুলো। এজন্য সবার আগে জানা চাই তার মাসিক নিয়মিত হয় কিনা, হলে তা কতদিন পরপর হয়। এবার সবচেয়ে কম যতদিন পরপর মাসিক হয় তা থেকে ১৮ দিন বাদ দিন, মাসিক শুরুর ১ম দিন থেকে ঐ দিনটিই হলো প্রথম অনিরাপদ দিন। আবার আপনার স্ত্রীর সবচেয়ে বেশী যতদিন পরপর মাসিক হয় তা থেকে ১০ দিন বাদ দিন, মাসিক শুরুর ১ম দিন থেকে ঐ দিনটিই হলো শেষ অনিরাপদ দিন।
ধরুন স্ত্রীর মাসিক ২৮ থেকে ৩০ দিন পরপর হয়। তাহলে ২৮-১৮=১০, অর্থাৎ মাসিকের শুরুর পর থেকে প্রথম ৯ দিন আপনার জন্য নিরাপদ দিবস, এই দিন গুলোতে অন্য কোনো পদ্ধতি ছাড়াই সঙ্গম করা যাবে। ১০ম দিন থেকে অনিরাপদ দিবস, তাই ১০ম দিন থেকে সঙ্গমে সংযম আনতে হবে। আবার যেহেতু ৩০ দিন হলো দীর্ঘতম মাসিক চক্র তাই ৩০-১০=২০, অর্থাৎ ২০তম দিন আপনার জন্য শেষ অনিরাপদ দিবস। ২১ তম দিবস থেকে আপনি আবার অবাধ সঙ্গম করতে পারবেন। এর অর্থ এই উদাহরনে শুধু ১০ম থেকে ২০ম দিবস পর্যন্ত আপনি অবাধ সঙ্গম করলে আপনার স্ত্রীর গর্ভধারন করার সম্ভাবনা আছে। তবে এই দিবস গুলোতে কনডম (Condom) ব্যবহার করে আপনারা অতি সহজেই ঝুকিমুক্ত থাকতে পারেন।
জেনে রাখা ভালো অনিয়মিতভাবে মাসিক হবার ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি কার্যকর নয়। তবে কারো যদি হিসাব রাখতে সমস্যা হয় তবে সহজ করার জন্য বলা যায় মাসিক শুরুর পর ১ম ৭ দিন এবং মাসিক শুরুর আগের ৭ দিন অবাধ সঙ্গম করা নিরাপদ।
কৃতিক জন্মনিয়ন্ত্রন ৮০% নিরাপদ, বা এর সাফল্যের হার শতকরা ৮০ ভাগ। সাধারনত হিসেবে গন্ডগোল করে ফেলা, অনিরাপদ দিবসেও সূযোগ নেয়া বা ঝুকি নেয়া, অনিয়মিত মাসিক হওয়া এসব কারনে এই পদ্ধতি ব্যর্থ হতে পারে। তাই সঠিক হিসেব জেনে নেবার জন্য ১ম বার চিকিৎসকের স্মরনাপন্ন হওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে। কিছু পুরুষের শুক্রানুর আয়ু বেশী হওয়ার কারনে তারা এটায় সফল নাও হতে পারেন এবং সেক্ষেত্রে অনিরাপদ দিবস ২ দিন বাড়িয়ে নেবার প্রয়োজন হতে পারে। অনেকে এটা Programmed sex বলে একে ঝামেলাপুর্ণ মনে করেন, কিন্ত একবার এতে অভ্যস্ত হয়ে গেলে এটা বেশ সহজ, আরামদায়ক এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন।