স্বামী স্ত্রীর সহবাস বা যৌন মিলনের স্থায়িত্ব কত সময় হওয়া উচিৎ?

তরুণ-যুবকদের কাছ থেকে প্রায়ই এ ধরনের প্রশ্ন আসে আমাদের কাছে। তাই চিন্তা করলাম বিষয়টা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা দরকার। স্বামী স্ত্রীর সহবাস বা যৌন মিলনের স্থায়িত্ব বা আদর্শ সময় কতটুকু হওয়া দরকার এ বিষয়টা নিয়ে মূলত অবিবাহিত তরুণরাই বেশি প্রশ্ন করে থাকেন।

সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব সেক্সুয়াল মেডিসিনে প্রকাশিত এক গবেষণার ফলাফলে পাওয়া গেছে যে- “সর্বোত্তম যৌন মিলনের সময়-ব্যপ্তি ৭ (সাত) থেকে ১৩ (তের) মিনিট পর্যন্ত হয়ে থাকে ” তবে ড. ইরিক কোট্রি, বিহ্‌রেন্ড কলেজ ইন ইরিক, পেনসিলভিনিয়া তার গবেষনায় প্রমান করেছেন – ৩ (তিন) মিনেটের ভালবাসাপুর্ন শাররীক মিলনই ‘পর্যাপ্ত‘।

গবেষনায় যৌন অভিজ্ঞদের কাছে তাদের ‘পেনিট্রেটিভ সেক্স অর্থাৎ লিঙ্গ যৌনাঙ্গে স্থাপন করে অন্তরঙ্গ মিলন’ এর সময় ব্যপ্তির বিশ্বাস সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়। এজন্য আমেরিকান এবং কানাডিয়ান যুগলকে র‌্যান্ডম সিলেকশানের মাধ্যমে প্রশ্ন করা হয়। তাদের সবার উত্তর-ই ছিল – সাত থেকে তের মিনিটের যৌন মিলন ‘কাম্য বা বাঞ্চনীয়’।
গবেষনার সমাপ্তিতে  বলা হয় ৩ (তিন) থেকে ৭ (সাত) মিনেটের যৌনমিলন মোটের উপর “পর্যাপ্ত” কিন্তু তিন মিনেটের কম সময় “খুব কম সময়” এবং তের মিনিটের বেশি সময় মিলন “খুব লম্বা সময়“।
এই গবেষনা মুলত নারীপুরুষের স্বাস্থ্যকর শাররীক মিলনে সময়কাল নিয়ে “অবাস্তব কল্পনা” দূর করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়েছিল। কারণ নিউজ.কম.এইউ ড. ইরিক কোট্রি এর উদ্বৃতি দিয়ে প্রকাশ করেছে যে-যৌন বিষয়ে নারীর অবাস্তব কল্পনাগুলো হচ্ছে – পুরুষের লিঙ্গ হবে মোটা এবং লম্বা, উত্তেজিত অবস্থায় রডের মত দৃঢ়, এবং সারারাত ধরে মিলনে সামর্থ্যবান। অন্যদিকে পুরুষের ভাবনায় – নারী হবে বিছানায় যৌনকর্মঠ, নিটোল এবং সুন্দর শরীরের অধিকারী, সকল অবস্থায় সহযোগী।
অংশগ্রহনকারী যুগলকে তাদের উত্তর প্রদানের পর যৌনমিলনের আদর্শ/মানদন্ড সম্পর্কে নির্দেশনা দেয়া হয়। তাদেরকে শাররীক মিলনে তৃপ্তির সুচক হিসেবে অলীক কল্পনা থেকে বেরিয়ে এসে বাস্তববাদী হবার পরামর্শ দেয়া হয়।
অন্য একটি গবেষনায় পাওয়া তথ্য মতে – যৌনবিষয়ে সঠিক শিক্ষা, অঞ্চল, চামড়ার রঙ এবং শারীরিক আকারের পার্থক্যের উপর ভিত্তি করে যৌনমিলনে সময়-ব্যপ্তির তারতম্য দেখা যায়। দক্ষিন এশিয়ার দেশগুলি যেমন:- বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমার (বাদামী চামড়ার মধ্যম আকারের মানুষ) অর্থাৎ এই অঞ্চলের দম্পতীদের মিলনকালের (পেনিট্রেটিভ সেক্স) গড় সময় ৪ (চার) মিনিট কে “পর্যাপ্ত” বলা হয়েছে। এর সাথে উল্লেখ্য – এ অঞ্চলের নারীরা অজ্ঞতা এবং সঙ্গী খারাপ মনে করবে এই ধারনা থেকে মিলনকালে সক্রিয় না থাকার কারনে পশ্চিমা বিশ্বের তুলনায় অনেক কম হারে পুর্ন-কাম-তৃপ্তি অর্জন করে থাকেন।

আশা করি আপনাদের সবারই স্বামী স্ত্রীর সহবাস বা যৌন মিলনের স্থায়িত্ব নিয়ে বাস্তব ধারনাটা হয়ে গেছে। আর একটা বিষয় মনে রাখবেন পুরুষদের ক্ষেত্রে যৌন মিলনের স্থায়িত্বটা তাদের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে না। এটা সরাসরি নির্ভর করে শারীরিক সক্ষমতার উপর। তাই নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, ব্যায়াম করা ইত্যাদির মাধ্যমে পুরুষ তাদের যৌন মিলনের সক্ষমতাটা ধরে রাখতে পারেন, এক্ষেত্রে  কোন প্রকার ঔষধ খাওয়ার দরকার নেই।

গবেষণায় দেখা গেছে যে সকল পুরুষ যৌন শক্তির জন্য নানা প্রকার হারবাল ঔষধ খেয়ে থাকেন এক সময় তারা নিজেদের যৌন সক্ষমতাটা হারিয়ে ফেলেন এমন কি তখন তাদের শরীরে এর জন্য আর কোনো ঔষধই কাজ করে না। তাই কোনো সময় ভুল করেও চিকিত্সকের পরামর্শ ছাড়া অথবা সখের বসে ঐসব উত্তেজক হারবাল ঔষধ খাবেন না। কারণ এটাই এক সময় আপনার যৌন জীবন বিপর্যস্থ করে তুলবে। যৌন সংক্রান্ত কোন সমস্যা থাকলে হোমিওপ্যাথি চিকিত্সা নিন যা অল্প কয়েক দিনেই আপনাকে চির আরোগ্যের দিকে নিয়ে যাবে এবং তার জন্য আপনাকে আর কখনো ঔষধ খেতে হবে না।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *