গর্ভবতী মায়েদের খাদ্য এবং পুষ্টি কেমন হওয়া উচিত !

স্বাভাবিক অবস্থায় একটি শিশু ২৮০ দিন বা নয় মাস ১০ দিন মাতৃগর্ভে বেড়ে ওঠার পর পৃথিবীর আলো দেখতে পায়। এই সময়ে তার বেড়ে ওঠা ও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ নির্ভর করে মায়ের কাছ থেকে পাওয়া পুষ্টির ওপর। আর এই বিষয়ে আলোকপাত করেছেন পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার।
গর্ভাবস্থায় অপর্যাপ্ত খাদ্য গ্রহণ এবং অপুষ্টির কারণে একদিকে যেমন কম ওজনের ও অপুষ্ট শিশু জন্মগ্রহণ করে, তেমনি মায়েরও রক্তশূন্যতা, আমিষের অভাব, দুর্বলতা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। এ সময় তাই হবু মায়ের খাদ্যাভ্যাসের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি। তাই প্রতিদিনের সুষম খাদ্য পরিকল্পনা করার সময় কিছু বিশেষ উপাদানের দিকে লক্ষ রাখা উচিত মায়েদের।
লৌহ :-
স্বাভাবিক অবস্থায় একজন পূর্ণবয়স্ক নারীর দৈনিক ৩০ গ্রাম লৌহ বা আয়রন দরকার হয়, কিন্তু গর্ভকালীন সময়ে দরকার হয় দৈনিক ৩৮ গ্রাম। লৌহ অনেক পরিমাণে পাওয়া যাবে কলিজা, শুকনো ফল, সবুজ সবজি, কালো কচুশাক, পালংশাক, লালশাক, টেংরা মাছ, বিট, গুড়, খেজুর, সফেদা ও টক ফলমূল ইত্যাদিতে।
আমিষ :-
স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি আমিষ দরকার হয় এ সময়। ভ্রূণের সঠিক বৃদ্ধি, স্তনগ্রন্থীর বৃদ্ধি ইত্যাদি নিশ্চিত করতে আমিষ প্রয়োজন। দৈনিক ৯০ থেকে ১০০ গ্রাম আমিষ দরকার হবে এ সময়। এই আমিষের মূল উৎস হবে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, বাদাম, ডাল ও সিমের বিচি।
ক্যালসিয়াম :-
নবজাতকের হাড় ও দাঁত গঠনের জন্য শেষ তিন মাসে প্রচুর ক্যালসিয়াম দরকার হয়। একজন গর্ভবতী নারীর দৈনিক অন্তত এক হাজার মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম খেতে হবে। দুধ ও দই ক্যালসিয়ামের একটি আদর্শ উৎস। এ ছাড়া ডাল, সরিষাশাক, বাঁধাকপি, শালগম, বিট, বাদাম, মাছ এবং ফলের মধ্যে কমলা ও আঙুরে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ অনেক।
ফলিক অ্যাসিড :-
ফলিক অ্যাসিডের অভাবে মায়েদের রক্তস্বল্পতা হতে পারে। এ ছাড়া ফলিক অ্যাসিড সন্তানের জন্মগত বিকলাঙ্গতা প্রতিরোধ করে। গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে চার গুণ বেশি ফলিক অ্যাসিড খাওয়া উচিত। পালংশাক, লেটুস, কলিজা, শুকনো সিমের বিচি, ডিম, ডাল, দুধ ইত্যাদি ফলিক অ্যাসিডের উৎস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *