♦♦ প্রস্রাবের জ্বালা-পোড়া

লক্ষণ ও উপসর্গ
১. পিঠের পেছনদিকে উদরের নিচে ব্যথা|
২. প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়া, ব্যথা হওয়া সহ অন্যান্য অস্বস্তিকর অনুভূতি।
৩. পুন:পুন: প্রস্রাবের তাগিদ অনুভব কিন্তু খুবই সামান্য প্রস্রাবের নির্গমন।
৪. ঘোলাটে, কড়া গন্ধযুক্ত এবং রক্ত সমন্বিত প্রস্রাবের নির্গমন।
৫. প্রস্রাবের সাথে হলদেটে পদার্থের নির্গমন (মূত্রনালী দিয়ে)
৬. মহিলাদের ক্ষেত্রে যৌন মিলনের সময় পীড়াদায়ক অনুভুতি বা ব্যথা পাওয়া।
কী করা উচিতঃ-
১. মদ, ক্যাফেইন, মশলাযুক্ত খাবার এবং এসিড সমৃদ্ধ খাবার বর্জন করুন কেননা এগুলো আপনার পিত্ত থলিকে আরও বেশি সমস্যায় আক্রান্ত করে।
২. দৈনিক আট থেকে দশ গ্লাশ পানি খাবেন যাতে করে আপনার প্রস্রাবে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়াগুলো গলে প্রস্রাব দিয়ে বেরিয়ে আসে। (তবে ডাক্তারের কাছে পরীক্ষারউদ্দেশ্যে যাবার আগে বেশি পানি খাবেন না, নচেৎ আপনার প্রস্রাবের ব্যাকটেরিয়ার অস্তিত্ব ঠিকমতো উদঘাটন করা সম্ভব হবে না।)
৩. একটা গরম কিছু বা হট ওয়াটার ব্যাগ বা বোতল চেপে ধরে ব্যথার স্থানে রাখতে পারেন।
৪. যদি প্রেস্রাবের জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যে দেয়া এন্টিবায়োটিক ওষুধগুলো আপনার শরীরে ইস্ট বা ছত্রাকের আক্রমণ ঘটায় সেক্ষেত্রে টক দই খেতে পারেন। টক দইয়ের ব্যাকটেরিয়া ছত্রাকের আক্রমণ প্রতিহত করতে সক্ষম।
কখন ডাক্তার দেখাবেনঃ-
১. যদি তীব্র ব্যথা জেগে ওঠে এবং এই ব্যথা আপনার পাঁজরের পেছনে নিচ থেকে শুরু হয়ে আপনার যৌনাঙ্গের দিকে বয়ে যায়, সেক্ষেত্রে আপনার হয়তো কিডনিতে পাথরের সমস্যা।
২. যদি আপনার জ্বর থাকে এবং জ্বর দ্রুত বেড়ে ওঠে এবং আপনার পিঠে হঠাৎ করে তীব্রব্যথা হয়, কিংবা আপনার কোমরের কাছে বা কোমরের উপরে ব্যথা করে, সেক্ষেত্রে আপনার কিডনিতে ক্ষতের সমস্যা রয়েছে।
৩. আপনি যদি নারী হন এবং প্রস্রাবের সময় যদি কষ্ট হয় এবং সেই সাথে যদি একটানা ব্যথা থাকে আপনার পিঠের নিম্নাংশে কিংবা তলপেটে বা উদরে; যদি যৌন মিলনের সময় কষ্ট হয়, এবং/কিংবা অনিয়মিত ঋতুস্রাব হয়, কিংবা হঠাৎ হঠাৎ না হয় বা হলে খুবইবেশি রক্তপাত হয়। সেক্ষেত্রে আপনার হয়তো ডোমাটরিওসিস বা পেলভিক ইনফ্ল্যামেটোরিডিজিজ হয়েছে।
৪. যদি প্রস্রাবে কষ্ট হয় এবং একইসাথে উদ্ভট কোন পদার্থ প্রস্রাবের সাথে শিশ্ন কিংবা যোনী পথ দিয়ে নির্গত হয় সেক্ষেত্রে আপনার হয়তো যৌন সাহচার্য ঘটিত সংক্রামক কোন রোগ হয়েছে।৫. যদি আপনি একজন পুরুষ হন এবং প্রস্রাবের সময় আপনার জ্বালা-পোড়া হয় কিন্তু পুন:পুন: পস্রাবের তাগিদ অনুভব করেন, প্রস্রাব থেমে থেমে নির্গত হয়, বীর্যপাতে কষ্ট হয়, কিংবা পেলভিস বা শ্রোণীতে কিংবা পিঠের নিম্নাংশে যদি ব্যথা থাকে সেক্ষেত্রে আপনার হয়তো প্রস্টেট-এর সমস্যা রয়েছে।
৬. যদি আপনার প্রস্রাব রক্তাক্ত দেখা যায় কিংবা ঘোলাটে দেখা যায়৭. যদি আপনার প্রস্রাবে জ্বালা পোড়া হয় কিংবা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন রোগের লক্ষণ ধরা পড়ে।
৮. যদি এই লক্ষণগুলো অপসারিত না হয় এবং চিকিৎসা স্বত্তেও লক্ষণগুলো আবার জেগে ওঠে।
কীভাবে প্রতিরোধ করবেনঃ-
১. প্রতিদিন নূন্যতম আট গ্লাস পানীয় খান সাথে পানি প্রচুর পরিমাণে পান করুন। ক্রানবেরির জুস খেতে পারেন, এটা মাঝে মধ্যে ক্ষত সৃষ্টি হওয়া থেকে শরীরকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
২. প্রস্রাবের তাগিদ অনুভব করলে প্রস্রাব দমিয়ে রাখবেন না। এবং প্রতিবার প্রস্রাবের সময় আপনার মূত্রথলিটি পুরোপুরি খালি হচ্ছে কি না সে বিষয়ে যত্নশীল হোন।
৩. যৌন সংসর্গের আগে ও পরে যৌনাঙ্গ ধুয়ে ফেলুন, কেননা এর ফলে যৌনমিলনের দরুন আপনার যৌনাঙ্গে কোন ব্যাকটেরিয়া গিয়ে থাকলে সেটা বেরিয়ে আসবে।
৪. বুদবুদ ওঠা পানিতে স্নান এড়িয়ে চলুন এবং সুগন্ধীযুক্ত টয়লেট্রিজগুলোও বর্জন করুন। একটা মৃদু এবং গন্ধহীন সাবান নিয়ে আপনার নিম্নাঙ্গের পরিধেয়গুলো ধৌত করুন। সুগন্ধীযুক্ত এবং রুক্ষ বা ক্ষারীয় পণ্যগুলো মূত্রনালী এবং এর চারপাশের ত্বকে প্রদাহ তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
৫. সুতির কাপড়ের তৈরি নিম্নাঙ্গের বস্ত্রাদি পরিধান করুন এবং ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করুন।
৬. আপনার যৌনাঙ্গ প্রতিদিন একবার পরিস্কার পানি দিয়ে ধৌত করুন।
মহিলাদের ক্ষেত্রেঃ-
১. আপনি যদি ডায়াফার্ম ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রে এটা উষ্ন ফেনায়িত জলে ধুয়ে সাবধানে জল নিংড়িয়ে শুকতে দিন। যদি আপনার ইনফেকশান বা ক্ষতগুলো পুন:পুন: জন্মাতে থাকে সেক্ষেত্রে ডাক্তারকে দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নিন সেটা কি ডায়াফার্মের সঠিক আকার না হবার কারণে ঘটছে কি না। যদি আকার পরিবর্তন করার পরও আপনার সমস্যার সমাধান না হয় সেক্ষেত্রে জন্মনিয়ন্ত্রনের অন্য কোন পদ্ধতি অবলম্বন করুন।
২. মূত্রনালীকে ব্যাকটেরিয়া মুক্ত রাখতে সবসময় টয়লেট থেকে বেরোবার আগে নিজেকেভালোভাবে পরিস্কার করে নিন।ভাল লাগলে পোস্ট টি অবশ্যই শেয়ার করুন


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *