যার সন্তান হয় না তাকে বন্ধ্যা বলে। অর্থাৎ সন্তান উৎপাদনে অক্ষমতা এটি একটি শারীরিক ত্রুটি। এই সমস্যাটি কিন্তু স্বামী বা স্ত্রী উভয়েরই হতে পারে। যদিও বাস্তবে স্ত্রীকে দোষী করা হয়। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, পুরুষের বন্ধ্যাত্ব ৪০ভাগ এবং মহিলা বন্ধ্যাত্ব প্রায় ৩৫. বন্ধ্যাত্বের অঙ্কে ব্যাখ্যাহীন ২৫ শতাংশ। পুরুষের সমস্যা চিরকাল ছিল।এখন দেখা যাক বন্ধ্যাত্ব কী? : অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বন্ধ্যাত্বের স্বরূপ না বুঝেই বাঁজা তকমা দেয়া হয়। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত সংজ্ঞাটি হলো কোনো সুস্থ স্বাভাবিক দম্পতির ক্ষেত্রে টানা দুবছর যাবত নিয়মিত অসুরক্ষিত যৌন সংসর্গের পরেও যদি স্ত্রীর গর্ভ সঞ্চার সম্ভব না হয়, তখন তাকে বন্ধ্যাত্ব আখ্যা দেয়া হয়। প্রথমে গর্ভধারণে সক্ষম না হলে তাকে প্রাইমারি ইনফাটিলিটি এবং দ্বিতীয়বার গর্ভধারণ অক্ষম হলে তাকে সেকেন্ডারি ইনফাটিলিটি বলে। এক্ষেত্রে গর্ভধারণ বলতে মসক্যারেজ বা অন্য কোনো সমস্যা ছাড়াই পুরো সময়ের যে গর্ভধারণ বাফুলটার্ম প্রেগন্যান্সির কথা বলা হচ্ছে।বন্ধ্যাত্বের কারণ : বন্ধ্যাত্বের কারণ নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। একটি বিশেষ কিংবা অনেক কারণের ফল বন্ধ্যাত্ব। বন্ধ্যাত্বের কারণ হিসেবে বেশি বয়সকেই দায়ী করা হয়। বিশেষত ৩৫ বছরের বেশি বয়স যে মহিলাদের সবচেয়ে বেশি চিহ্নিত করেন চিকিৎসকরা। প্রজননতন্ত্রের কোনো গঠনগত বা শারীর বৃত্তীয় ত্রুটি থেকেও বন্ধ্যাত্বের সূত্রপাত। এছাড়া জিনগত কারণও যেমন বন্ধ্যাত্বের জন্ম দিতে পারে। তেমনই হরমোন ঘটিত নানা অসুখ-বিসুখ (ডায়াবিটিস, থাইরয়েডর গ-গোল, অ্যাড্রেনাল ডিজিজ ইত্যাদি). কিংবা পিটুইটারি গ্রন্থি সমস্যার কারণেও বন্ধ্যাত্বের থাবা বসায় দাম্পত্য জীবনে। পরিবেশের প্রভূত কুপ্রভাব পড়েছে বন্ধ্যাত্বের ক্ষেত্রে। কিছু উদ্বায়ী জৈব রাসায়নিক সিলিকন, কেমিকেল ড্যাট, কীটনাশক ইত্যাদি বিষাক্ত প্রভাব প্রজনন ক্ষমতা কমিয়ে দেয় তাৎপর্যপূর্ণভাবে। ধূমপানের প্রভূত নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। একজন অধূমপায়ীর চেয়ে একজন ধূমপায়ীর ঝুঁকিও এ ব্যাপারে ৬০ শতাংশ বেশি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
স্ত্রী বন্ধ্যাত্বের সুনির্দিষ্ট কারণ :
নারী দেহের জটিল গঠনতন্ত্রের ফল, নানাবিধকারণে বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে।
১. ওভুলেশন বা ডিম্বাণু নিরসরনের সমস্যা। ঋতুচক্রের যে সময়ে ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু নির্গত হয়। সেই সময়ে সংসর্গ হওয়াটা গর্ভ সঞ্চারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায় তাদের ডিম্বাশয় পূর্ণতা লাভ করে না এবং ডিম্বাণু নিঃসৃত হয় না। স্বাভাবিকভাবেই তারা বন্ধ্যাত্বের শিকার।
২. টিউবের সমস্যা, এন্ডোমেট্রিয়োসিস হলেও বন্ধ্যান্তের ঝুঁকি থাকে ১০০ ভাগ। ফ্যালোপিয়ান টিউবের সংক্রমণ আপাত বা গঠনগত সমস্যা থাকলেও সন্তান ধারণে অসুবিধা হতে পারে।
৩. বেশি বয়স ৩৫ বছরের বেশি বয়সের মহিলাদের ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্বের আশঙ্কা বেশি।
৪. অত্যধিক বেশি বা কম ওজনের মহিলাদেরও গর্ভ সঞ্চারের সমস্যা দেখা যায়।
৫. অপরিণত বয়সে যৌন সংসর্গ মুরু হলেও বন্ধ্যাত্বের আশঙ্কা থাকে।পুরুষ বন্ধ্যাত্বের সুনির্দিষ্ট কারণ:পুরুষ দেহের গঠনতন্ত্র অপেক্ষাকৃত সরল হওয়ায় বন্ধ্যাত্বের কারণ খুব বেশি নেই। আপাত সংক্রমণ কিংবা জিনগত বা জন্মগত কারণে মূলত বীর্যের নিকৃষ্ট গুণগতমান কিংবা অপর্যাপ্ত শুক্রাণুর সংখ্যাই বন্ধ্যাত্বের মূল কারণ। পর্যাপ্ত শুক্রাণু থাকলেও তার সচলতা বা মোবিলিটি না থাকার কারণেও অনেক সময় পুরুষ বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে।উভয়ের বন্ধ্যাত্ব:স্বামী-স্ত্রীর দুজনের বন্ধ্যাত্বের কারণে ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে সন্তানের জন্ম দেয়া অধরা থাকে। অনেক সময় দুজনেরই যেমন বন্ধ্যাত্ব থাকে। তেমনি আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় এককভাবে স্বামী বা স্ত্রী হিসেবে হয়তো কেউই বন্ধ্যা নয়। অথচ দম্পতি হিসেবে সন্তান উৎপাদনে সক্ষম। শুনলে আশ্চর্য লাগলেও এমন ঘটনাল নমুনা প্রায় তিন শতাংশ।ব্যাখ্যাতীত কারণ:প্রায় ১৫ শতাংশ বন্ধ্যাত্বের কোনো নির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না।হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা জন্য যোগাযোগ