স্বামীর বা স্ত্রীর বন্ধ্যত্বের সফল হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা

দুই বৎসর বা তার থেকে বেশি সময় চেষ্টা করার পড়েও গর্ভধারণে ব্যার্থ হলে তাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বন্ধ্যত্ব বলে। ৮% দম্পতি বন্ধ্যত্বের শিকার হন। বন্ধ্যত্ব স্বামী বা স্ত্রী উভয়ের কারণে হতে পারে। বন্ধ্যত্ব দু ধরনের যথা:
প্রাথমিক বন্ধ্যত্ব :- বিবাহের পর সকল সুবিধা থাকা সত্ত্বেও কখনই গর্ভধারণ না হওয়াকে প্রাথমিক বন্ধ্যত্ব বলে।
দ্বিতীয় পর্যায়ের বন্ধ্যত্ব :- কোন মহিলা প্রথম বার গর্ভধারণের পর দ্বিতীয় বার আর যদি গর্ভধারণ করতে না পারে তবে তাকে পরবর্তী বা দ্বিতীয় পর্যায়ের বন্ধ্যত্ব বলে।
কারণ:- বন্ধ্যত্ব স্বামী বা স্ত্রী যে কোন একজনের কারণে হতে পারে। কিন্তু আমাদের সমাজে অন্যায় ভাবে শুধুমাত্র স্ত্রীদেরকে দোষারোপ করা হয় এমন কি কোন কোন ক্ষেত্রে স্বামীকে দ্বিতীয় বা তৃতীয় বিয়েতে উৎসাহিত করা হয়।
ক) স্বামীর কারণে বন্ধ্যত্ব:- 
  • স্বামীর বীর্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শুক্রাণু না থাকলে।
  • মৃত শুক্রাণু বা শুক্রাণু বিহীন বীর্যের কারণে
  • একটি অণ্ডকোষ/লুপ্ত প্রায় অণ্ডকোষ/অণ্ডকোষ জন্মগত ভাবে না থাকলে।
  • অণ্ডকোষের প্রদাহ, মাম্পস বা গলা ফুলা রোগের প্রদাহের কারণে।
  • বিকৃত শুক্রাণু থাকলে।
  • যৌন ক্রিয়ায় অক্ষম হলে।
  • শুক্রাণু বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় তাপ ও পরিবেষ অণ্ড কোষে না থাকলে।
  • যৌনাঙ্গে যক্ষ্মা, গনোরিয়া প্রভৃতি রোগ থাকলে।
খ) স্ত্রীর কারণে বন্ধ্যত্ব:-
  • যদি জরায়ুর আকার ছোট হয়।
  • ডিম্বাশয় যদি সঠিক ভাবে কাজ না করে।
  • মাসিকের গণ্ডগোল থাকলে।
  • বস্তি কোটরের প্রদাহ হলে।
  • বংশগত।
  • জরায়ুতে টিউমার হলে।
  • যক্ষ্মা গনোরিয়া ইত্যাদি রোগ হলে।
উল্লেখিত কারণগুলো ছাড়াও স্ত্রীর ডিম্ব ক্ষরণের সময় যৌনমিলন না হলে গর্ভধারণ হয় না।
রোগ নির্ণয়ে পরীক্ষা :- বন্ধ্যত্বের কারণ নির্ণয়ে প্রথমে স্বামীর বীর্য পরীক্ষা করে দেখতে হবে। এবং স্বামীর শারীরিক পরীক্ষা করে দেখতে হবে। যদি কোন অসুবিধা ধরা না পড়ে তখন স্ত্রীকে পরীক্ষা করতে হবে। স্ত্রীর পরীক্ষাগুলো ব্যয়বহুল বিধায় প্রথমে স্বামীকে পরীক্ষা করা উচিত।
পরামর্শ :- যদি কোন দম্পতির একবারেই সন্তান না হয় অথবা সন্তান হওয়ার পর দ্বিতীয় সন্তান কাঙ্ক্ষিত সময়ে না হয় তবে তাদেরকে নিন্মলিখিত পরামর্শ দেয়া উচিত:
স্বামী ও স্ত্রীকে আশ্বস্ত করে দুশ্চিন্তা কমাতে হবে (সব ঠিক থাকার পরেও শতকরা ২০ ভাগ দম্পতির ১ বছরে বাচ্চা নাও হতে পারে, শতকরা ১০ ভাগ দম্পতির ২ বছরে বাচ্চা নাও হতে পারে)।
স্ত্রীর ডিম্বক্ষরনের সময় অর্থাৎ মাসিক শুরুর ১১ তম দিন থেকে ১৮ তম দিন পর্যন্ত প্রতিদিন সম্ভব না হলে ১ দিন পরে পরে স্বামীর সাথে মিলনের পরামর্শ দিতে হবে।
স্বামীর বা স্ত্রীর কোন জটিল রোগ বা যৌন রোগ থাকলে তার চিকিৎসা করাতে হবে। স্বামী বা স্ত্রীর ধূমপান, মদ্যপান, যে কোন নেশা গ্রহণ, একনাগাড়ে দীর্ঘদিন এন্টিহিস্টামিন খাওয়া বর্জন করতে হবে। অতিরিক্ত পরিশ্রম, দুশ্চিন্তা, ওজন থাকলে কমাতে হবে।
চিকিৎসা, লক্ষণ :- হোমিওপ্যাথিতে বন্ধাত্ব রোগের চিকিৎসার জন্য লক্ষণ ও তার রেপার্টরি রুব্রিক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রতিটি লক্ষণের আলাদা আলাদা ঔষধ হোমিওপ্যাথিতে রয়েছে। যারা চিকিৎসা নিতে চান তারা নিজেদের সব লক্ষণসমূহ নিয়ে অভিজ্ঞ একজন হোমিও ডাক্তারের সাথে আলোচনা করুন। ডাক্তারকে আপনার সব কিছু স্পষ্ট করে জানালে চিকিৎসা পেতে সহজ হবে।

Leave a Reply