শিশুদের কৃমির সমস্যায় করণীয় কি কি ?

আমাদের শিশুদের জটিল সমস্যাগুলির মধ্যে একটি হলো কৃমির সমস্যা। শিশুদের পুষ্টিহীনতার জন্য কৃমি অনেকাংশে দায়ী। বিভিন্ন কারনে শিশুর কৃমির সমস্যা হতে পারে যেমন- নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানির অভাব, অপরিচ্ছন্নতা, খাওয়ার আগে হাত না পরিষ্কার করা ও খালি পায়ে হাঁটা ইত্যাদি। এর জন্য প্রতি বছর সরকারীভাবে আমাদের দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের জন্য কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ পালন করা হচ্ছে। শিশুর কৃমি সমস্যার কারনে রক্তশূন্যতা, অ্যালার্জিসহ বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে, শুধু তাই নয়, তাদের বেড়ে ওঠা এবং সুস্বাস্থ্য ব্যাহত হয়।
কীভাবে বুঝবেন কৃমির সংক্রমণ :-
বিভিন্ন প্রকারের কৃমি শিশুদের শরীরে নানান বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে থাকে। শিশুদের কৃমির প্রধান লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে :- আয়রনের ঘাটতি, বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া, খাওয়ার অরুচি, রক্তশূন্যতার জন্য দুর্বলতা, পেট ফাঁপা, অপুষ্টিতে ভোগা এবং ডায়রিয়া। কৃমির কারণে চুলকানি, অ্যালার্জি, শ্বাসকষ্ট এমন কি কাশিও হতে পারে।
এছাড়া বিভিন্ন ধরনের কৃমি বিশেষ করে গোল কৃমি পিত্তথলি, অগ্ন্যাশয় ও অ্যাপেনডিক্সে অবস্থান নিয়ে সংক্রমণ ঘটায় ও তীব্র ব্যথার অনুভূতি সৃষ্টি করে। শরীরের নানা অঙ্গে কৃমি মরে গিয়ে স্টোন জমার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে। কিছু কৃমি লিভারেরও ক্ষতি করে। চোখের ক্ষতি করে লোয়া লোয়া। কৃমির কারণে শরীরে ভিটামিন ‘এ’ কম শোষিত হয়, ফলে ভিটামিন ‘এ’র অভাবজনিত বিভিন্ন সমস্যা যেমন :- ত্বক, অন্ত্রের অ্যাপিথেলিয়াম ও চোখের ক্ষতি হয়। প্রচুরসংখ্যক কৃমি একসঙ্গে জমাট বেঁধে অন্ত্রের নালি বন্ধ করে দিতে পারে।
কৃমি সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা :-
অনেকের ধারণা পেটে ২-১ টা কৃমি থাকা ভাল। এ ধারণাটি মোটেই ঠিক নয়। কৃমি শরীরের কোন উপকার করে না বরং ক্ষতিই করে। কৃমি হজমে সাহায্য করে বলে মনে করেন অনেকে। এটিও একটি ভ্রান্ত ধারণা। কৃমি হজমে সাহায্য না করে উল্টো বদ-হজম, অজীর্ণ, ক্ষুধামান্দ্য ও পেটের পীড়ার সৃষ্টি করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *