নারীদের গর্ভাবস্থা এবং প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা

নারীরা গর্ভবতী হলে বয়োজ্যেষ্ঠ নানা উপদেশ আর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এসময় এটা করা ভালো আর ওটা করা ভালো নয়। এটা করবেনা, ওইটা খাবেনা, এটা ব্যবহার করলে সন্তানের জন্য খুব খারাপ এরকম আরো কত যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়! কিন্তু সব কিছুই কি আসলে মেনে চলাটা জরুরী? কিছু ভুল ধারণাও তো থাকতে পারে। আসুন তাহলে জেনে নেই এ অবস্থা সম্পর্কে কয়েকটি প্রচলিত ভুল ধারণা-
ভুল তথ্য :- Flu vaccine নেয়া যাবে না। অনেকেই ভয় পান এটা ভেবে যে এর কারণে গর্ভে থাকা শিশুর মারাত্মক ক্ষতি হবে। কেও কেও মনে করেন হয়ত তার শিশুর কিছু হবেনা কিন্তু তিনি নিজে ফ্লু তে আক্রান্ত হবেন।
সঠিক তথ্য :- Pregnancy তে নারীর immune system এ কিছু পরিবর্তন আসে। এসময় তাই একজন গর্ভবতী নারীর ফ্লু হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ অবস্থায় Flu vaccination তাই মা এবং মায়ের গর্ভে থাকা শিশুর জন্য খুব-ই জরুরী।
ভুল তথ্য :- ২ জন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ যতোটুকু খাদ্য গ্রহণ করে তত পরিমাণ খাদ্য একজন গর্ভবতী খাবেন।
সঠিক তথ্য :- যদি একজন গর্ভবতী নারীর ওজন গর্ভধারণের আগে স্বাভাবিক থেকে থাকে তাহলে শিশুর সঠিক বৃদ্ধির জন্য তাকে আগের তুলনায় প্রতিদিন অতিরিক্ত ৩০০ ক্যালোরি গ্রহণ করতে হবে। চিকিৎসক দের মতে একজন নারীর গর্ভাবস্থার আগে যদি overweight না হয়ে থাকে তাহলে গর্ভাবস্থায় তার ওজন ২৫ থেকে ৩৫ পাউন্ড বৃদ্ধি পাওয়াটা স্বাভাবিক কিন্তু এর বেশি নয়। কারণ শিশুর জন্মের পর মায়ের অতিরিক্ত ওজন কমাতে তাহলে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে। যদি ওজন ৫০পাউন্ডের বেশি বৃদ্ধি পায় তাহলে সেক্ষেত্রে শিশু জন্মের সময় কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে আর জন্মের সময় যেসব শিশু অতিরিক্ত ওজনের হয়ে থাকে তাদের বড় হওয়ার পরে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
ভুল তথ্য :- Hair dye করালে শিশুর ক্ষতি হবে।
সঠিক তথ্য :- Hair dye এর ক্ষেত্রে যেসব কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় সেগুলোর সামান্য অংশ আমাদের ত্বক absorb করে নেয় যা মা বা শিশুর জন্য ক্ষতিকর নয়। তবে কেমিক্যালের কড়া গন্ধে হয়ত একজন গর্ভবতী নারী অস্বস্তি বোধ করতে পারেন তাই এরকম সময়ে এমন জায়গায় Hair dye এর জন্য যেতে হবে যেখানে ventilation ব্যবস্থা ভালো থাকবে। তারপরেও যদি আপনার দুশ্চিন্তা থাকে এ ব্যাপারে তাহলে ammonia আছে এমন dye এড়িয়ে চলুন। আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গর্ভধারণের পর আপনার চুলের সহনশীলতায় পরিবর্তন আসতে পারে। গর্ভধারণের আগে যেই প্রোডাক্ট আপনার চুলে ভালো কাজ করত সেই এক-ই প্রোডাক্ট গর্ভধারণের পর কাজ নাও করতে পারে।
ভুল তথ্য :- গর্ভাবস্থায় caffeine গ্রহণ করা একদম বন্ধ করতে হবে কারন এটি গর্ভপাতের কারণ হতে পারে।
সঠিক তথ্য :- গবেষোণায় দেখা গিয়েছে যে একজন গর্ভবতী নারী যদি ২০০ মিলিগ্রামের কম (একটি ১২ ounce কফির কাপ এ যতটুকু কফি থাকবে) কফি পান করেন সেক্ষেত্রে তার গর্ভপাত আর low birth weight এর কোন ঝুঁকি থাকেনা।
ভুল তথ্য :- body scanner থেকে দূরে থাকুন।
সঠিক তথ্য :- বিভিন্ন জায়গায় প্রবেশ করার আগে আজকাল body scanner ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই কারণ Airport body scanner, সিকিউরিটি এক্স-রে মেশিন এগুলোর সামান্য radiation একজন গর্ভবতীর কোন ক্ষতি করতে পারেনা। তবে যেসব নারীর গর্ভধারণের পরবর্তী সময়ে lung অথবা cardiac সমস্যা দেখা দেয় তারা সাধারণত ৩০,০০০ ফুট উপরে অস্বস্তিতে পড়তে পারেন। তাই প্লেনে যাত্রা করার আগে তাদের চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শ নেয়া উচিত।
ভুল তথ্য :- গর্ভাবস্থায় মাছ খাওয়া যাবেনা।
সঠিক তথ্য :- সপ্তাহে ২বার মাছ খেতে পারলে ভালো কারণ মাছে omega-3 fatty acid আছে যা গর্ভে থাকা শিশুর ব্রেইন ডেভেলপমেন্ট আর দৃষ্টি শক্তির জন্য জরুরী। তবে অবশ্যই রান্না করা মাছ খেতে হবে আর অনেক বেশি mercury আছে এমন মাছ খাওয়া যাবেনা। আমাদের দেশে এখন কিছু জায়গায় sushi অথবা sashimi পাওয়া যায়,বিশেষ করে কোন ফুড ফেস্টিভাল হলে, কোরিয়ান খাবারের দোকান গুলোতে বা ফাইভ স্টার হোটেল গুলোতে। এগুলো এক ধরণের জাপানীজ খাবার যেটাতে মাছ কিছুটা কাঁচা অবস্থায় থাকে। কাঁচা মাছে ব্যাক্টেরিয়া থাকার সম্ভাবনা রয়েছে যা গর্ভবতী নারী ও তার গর্ভে থাকা শিশুর জন্য ক্ষতিকর। তবে রান্না করা sushi খাওয়া যেতে পারে। বিভিন্ন দোকানে tuna মাছ পাওয়া যায় যা ক্যানের ভেতর প্রস্তুত করে রাখা থাকে। সেগুলো খাওয়া যেতে পারে।
ভুল তথ্য :- এ অবস্থায় সব সময় বা দিকে কাঁত হয়ে শুতে হবে।
সঠিক তথ্য :- যেদিকে বা যেভাবে শুয়ে আরাম বোধ হয় সেভাবে শুতে হবে।
ভুল তথ্য :- গর্ভবতী নারী coitus এ involve হতে পারবে না।
সঠিক তথ্য :- গর্ভবতী নারী coitus এ involve হতে পারবে। কারণ এর ফলে গর্ভে থাকা শিশুর শারীরিক কোন ক্ষতি হবেনা। শিশু amniotic sac এবং strong uterine muscle এর মাধ্যমে তার মায়ের গর্ভে সুরক্ষিত থাকে। তবে sexually transmitted infection যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এক্ষেত্রে সন্তানের মা ও বাবা ২ জন কেই সাবধান থাকতে হবে। কারণ গর্ভবতী নারী যদি herpes, genital warts, chlamydia, HIV দ্বারা আক্রান্ত হয় তাহলে তার কাছ থেকে তার গর্ভে থাকা শিশুর মাঝেও রোগ ছড়াতে পারে।তবে এ ব্যাপারে বেশি দুশ্চিন্তা হলে চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে যে coitus এ involve হওয়া ঝুঁকিপূর্ণ কিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *